খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে কে কে যাবেন জানিয়ে দিলেন খালেদা নিজেই

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দিতে বিদেশে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দল ও তার পরিবার।

সরকারের অনুমতি পেলে যে কোনো সময় তাকে নিয়ে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে যাবেন খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। এছাড়া ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও গৃহকর্মী ফাতেমা।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন খালেদা জিয়া তার এক স্বজনকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুমতি পাওয়া এবং যারা তার সঙ্গে যাবেন তাদের ভিসা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উন্নত চিকিৎসার উদ্দেশ্যে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন তারা।

এর আগে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেন তাঁর ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার।

গত বুধবার (৫ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় গিয়ে আবেদনপত্রটি হস্তান্তর করেন। আবেদনপত্রটি পর্যালোচনার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

গত ২৭ এপ্রিল রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার কিছু প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়েছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যায় ভুগছেন।

১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এর পর মেডিকেল টিম গঠন করে গুলশানের বাসায় তার চিকিৎসা শুরু হয়। করোনা আক্রান্তের ১৪ দিন পার হওয়ার পর আবার পরীক্ষা করা হলে ফল পজিটিভ আসে। তবে গত ৩০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার বাসভবনের সবাই করোনামুক্ত হয়েছেন।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে এক বছরের বেশি সময় বন্দিজীবন কাটানোর পর চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে আসা হয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কেবিন ব্লকের প্রিজন সেলে।

গত বছর সারাবিশ্বে মহামারি করোনা ছড়িয়ে পড়লে শর্তসাপেক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে জামিন পান খালেদা জিয়া। প্রায় ২৫ মাস (কারাগার ও বিএসএমএমইউ প্রিজন সেল) কারাভোগের পর তিনি ২০২০ সালের ২৫ মার্চ মুক্ত হন। মুক্তির পর গুলশানে নিজের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।

মূলত খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষে তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের আবেদন আমলে নিয়ে শর্তসাপেক্ষে তাকে জামিন দেওয়া হয়। প্রথমে ছয় মাসের জামিন দিলেও পরে তা আরও ছয় মাস করে দুই দফা বাড়ানো হয়।